জিল্লুর রহমান জয় : রাজশাহীর তালাইমারী এলাকায় পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনার দ্বিতীয় দিনেও খোঁজ মেলেনি নিখোঁজ ৩ কৃষকের। প্রতিকূল আবহাওয়া, প্রবল স্রোত ও আলোর স্বল্পতার কারণে আজকের মতো উদ্ধার কাজ স্থগিত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। তাদের ডুবুরি দল সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পদ্মায় উদ্ধার তৎপরতা চালায়। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে তৃতীয় দিনের মতো আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু করবে। তবে নিখোঁজ তিন জনের আর জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দফতরের উপ-সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, রোববার সকালে দুর্ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়। এরপর দ্বিতীয় দিনের মত সোমবারও পদ্মায় উদ্ধার অভিযান চালান ডুবুরিরা। কিন্তু নিখোঁজ তিনজনের সন্ধান মেলেনি। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় নদী এখন উত্তাল। প্রবল স্রোতের মধ্যে আলোর স্বল্পতার কারণে রাতে আর উদ্ধার তৎপরতা চালানো সম্ভব নয়। তাই আজ দ্বিতীয় দিনের মত উদ্ধার কাজ স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে আবারও উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
এদিকে, নৌকাডুবির পর তিনজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও বিজিবি সদস্যরা। এই ঘটনায় আরও তিনজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। পদ্মানদী থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া তিনজন হলেন- সেন্টু মিয়া (২৫), আব্দুস সালাম (৩০) ও আনারুল ইসলাম (৪৮)। বর্তমানে নিখোঁজ রয়েছেন- সাদেক আলী (৫৫), নজরুল ইসলাম (৫০) ও গোলাম নবী (৬০)। গোলাম নবীর বাড়ি মহানগরীর মতিহার থানার ডাঁসমারী সাতবাড়িয়া এলাকায়। অন্য দুজনের বাড়ি মিজানের মোড় এলাকায়। তারা সবাই কৃষি কাজ করেন।
এর আগে, রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল আনুমানিক ৮টা থেকে সোয়া ৮টার দিকে একটি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে নারী-পুরুষসহ ২২ জন যাত্রী রাজশাহীর তালাইমারী বিজয় নগর শাহপুর এলাকার ঘাট দিয়ে মধ্য চরে যাচ্ছিলেন। তারা চরে গিয়ে কৃষি জমিতে চাষবাস করেন। ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকায় বেশি যাত্রী নেওয়ায় মাঝনদীতে গিয়ে প্রবল স্রোতের তোড়ো তাদের ওই ডিঙ্গি নৌকায় পানি উঠে যায়। এক পর্যায়ে ওই ডিঙ্গি নৌকাটি নদী গর্ভে তলিয়ে যায়।
পরে সাঁতরিয়ে ওই নৌকার ১৮ যাত্রী পাড়ে উঠে আসলেও তিনজন নদীতেই তলিয়ে যান বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এখনও তারা নিখোঁজ। এদিকে, ওই একই সময় সেখান দিয়ে ঘাস বোঝাই আরও একটি ডিঙ্গি নৌকা তিন জন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল। ওই নৌকাটিও সেখানে ডুবে যায়। পরে বিজিবি সদস্যদের সহযোগিতায় ওই তিনজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এরপর আজও সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীতে নিখোঁজ তিনজনের খোঁজে উদ্ধার তৎপরতা চলে।