রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত, আটক ৭২৪

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে রুশ সেনাবাহিনীতে রিজার্ভ সৈন্যদের ডেকে পাঠানোর পর বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাশিয়ায়। দেশজুড়ে অব্যাহত বিক্ষোভে গতকাল আরও ৭২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ায় সেনাবাহিনীতে রিজার্ভ সৈন্যদের ডেকে পাঠানোর পর প্রতিবাদ করায় শত শত মানুষকে আটক করা হয়েছে বলে একটি মানবাধিকার গ্রুপ জানিয়েছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধে রসদ ও সরঞ্জাম সরবরাহে ব্যর্থতার অভিযোগে রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। জেনারেল দিমিত্রি বুলগাকোভকে নতুন দায়িত্বে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ

ওভিডি-ইনফো নামে মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, শনিবার রাশিয়ার ৩২টি শহরে ৭২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধে যোগ দিতে তিন লাখ সৈন্য সমাবেশ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এজন্য রিজার্ভ সৈন্যদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে যাদের সামরিক প্রশিক্ষণ আছে তাদের রিজার্ভ সৈন্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

এছাড়া রিজার্ভ তালিকায় সাবেক সৈন্যরাও রয়েছে। ধারণা করা হয়, রাশিয়া তাদের প্রায় ১৯০,০০০ জন নিয়মিত সৈন্য ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য মোতায়েন করেছে। কিন্তু ভ্লাদিমির পুতিনের ওই ঘোষণার পর থেকেই রাশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

রাশিয়ার আইন অনুযায়ী, অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করা নিষিদ্ধ। এরপরেও রাশিয়ার শহরগুলোজুড়ে বড় আকারের বিক্ষোভ চলছে। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কারণে এক হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। সেন্ট পিটার্গবার্গে একজন ব্যক্তি সাংবাদিকদের বলেন, ”পুতিনের জন্য আমি যুদ্ধ করতে যেতে চাই না।”

শনিবার যাদের আটক করা হয়েছে, সেই সময় তাদের কারও কারও হাতে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার কাগজ দেয়া হয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে। সেই সময় তাদের আটক করে রাখে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ক্রেমলিন এর আগে জানিয়েছিল, এটা আইনের মধ্যে থেকেই করা হচ্ছে।

মস্কো নতুন যে আইন করেছে, তাতে সেনাবাহিনীতে একবার নাম লেখানোর পর পালিয়ে গেলে বা দায়িত্ব পালন না করলে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

শনিবার একটি ডিক্রি জারি করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন, যেখানে বলা হয়েছে, কোন সৈন্য যদি আত্মসমর্পণ করে, সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে যায় অথবা যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

সেই সঙ্গে বিদেশি কোন নাগরিক যদি অন্তত এক বছরের জন্য রাশিয়ান সৈন্যবাহিনীতে কাজ করার জন্য নাম লেখায়, তাহলে তাকে রাশিয়ার নাগরিকত্ব দেয়ার একটি আইনেরও স্বাক্ষর করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।

অন্যদিকে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া এড়াতে হাজার হাজার তরুণ দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ড সীমান্তে দেশত্যাগের জন্য দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।

তবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী, ব্যাংকার আর গণমাধ্যমকর্মীদের সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সূত্র: বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *