বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তানে সফর করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

বন্যায় বিধ্বস্ত পাকিস্তানে সফর করেছেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। সেখানে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি দেখে তিনি হতবাক হয়ে গেছেন। অ্যাঞ্জেলিনা জোলি জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই পাকিস্তানে এই বিপর্যয় নেমে এসেছে। এ বিষয়ে বিশ্বকে সচেতন হতে হবে। তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করার পর আরও আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর এএফপির।

চলতি মৌসুমে নজিরবিহীন বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান। দেশটির এক তৃতীয়াংশ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ছয়শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া ৭০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। অনেকেই অস্থায়ী তাঁবুতে বাস করছেন। যেখানে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

এর আগে ২০১০ সালে ভয়াবহ বন্যা এবং ২০০২ সালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর পাকিস্তান সফর করেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তবে এবারের পরিস্থিতি বেশি ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। জোলি বলেন, আমি এর আগে এমন কিছু দেখিনি। তিনি বলেন, আমি অবশ্যই আপনাদের সঙ্গে আছি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও বেশি কিছু করার ব্যাপারে আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রতিনিধিত্ব করছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তিনি দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বন্যায় ওই অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতিবেশী ভারতে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে পাকিস্তানের নদীগুলো ফুলেফেঁপে উঠে আবারও বন্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়াতে বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অবশ্য পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগের ওয়েবসাইট সূত্রে কোনো নদীর পানি এখন পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানা যায়নি।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে দীর্ঘদিন থেকেই অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। তার মধ্যে ভয়ংকর বন্যা আরও বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। বন্যায় পাকিস্তানের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ, যা গোটা অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।

দুর্গত এলাকাগুলোতে ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পাকিস্তানের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য এরই মধ্যে ১৬ কোটি ডলারের জরুরি তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *