উপকূলজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে দুই শতাধিক তিমি!

উপকূলজুড়ে পড়ে রয়েছে ২৩০টি তিমি! অধিকাংশই মৃত। তবে এর মাঝেও কিছু জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে। এটি তাসমানিয়ার পশ্চিম উপকূলের এই দৃশ্য। তিমিগুলো উদ্ধারে তৎপরতা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, সপ্তাহদুয়েক আগেই ১৪টি স্পার্ম হোয়েলস তাসমানিয়ার উত্তরপশ্চিম উপকূলে উঠে এসেছিল। তারপর আবার এই দৃশ্য, যা নিয়ে প্রকৃতিবিদ পরিবেশবিদদের মধ্যে সাড়া পড়ে গেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও রীতিমতো চর্চা চলছে বিষয়টি নিয়ে।

‘ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড এনভিরনমেন্ট তাসমানিয়া’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সমুদ্র সংরক্ষক যারা তারা এখন যে যে সমুদ্র উপকূলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিপথগামী এসব তিমি, সেসব জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখছেন। তারা তাসমানিয়ার ম্যাককুয়্যারি হারবারেও গিয়েছেন। তারা মনে করেছেন, হঠাৎ করে সৈকতে উঠে-আসা এই তিমিদের মধ্যে বেশ কিছু বেঁচে থাকতে পারে। তারা যে বিপুল কর্মভার গ্রহণ করেছেন সেখানে স্থানীয় সাধারণ মানুষেরও সহায়তা জরুরি। সাধারণ মানুষ যাতে বিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে এই উদ্ধারকাজে সামিল হয় সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে স্থানীয়দের আরও আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন কোনওভাবেই যেন সৈকতে আসা তিমিদের বিরক্ত না করেন। যেগুলো এখনও জীবিত আছে, তাদের তো নয়ই, এমনকি, যেগুলো ইতোমধ্যেই মারা গেছে সেগুলো নিয়েও যেন সাধারণ মানুষ কিছু না করে। ওয়েস্ট কোস্ট কাউন্সিলের জেনারেল ম্যানেজার ডেভিড মিডসন বলেছেন, এই তিমিগুলো প্রোটেক্টেড স্পিসিসের অন্তর্গত। ফলে এদের কোনওভাবেই বিরক্ত করা যাবে না।

কিন্তু কেন এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে? কেন তিমিরা সমুদ্র ছেড়ে বারবার উঠে আসছে সৈকতে? এ নিয়ে কী বলছেন বিজ্ঞানীরা? গ্রিফিথ বিশ্বিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞানী ওলাফ মেইনেকে এই ঘটনাকে খুবই অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, সমুদ্রের পানি ক্রমশ গরম হয়ে উঠছে, এর ফলে তিমি বা অন্যান্য  সামুদ্রিক প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে সমুদ্র ক্রমশ এক প্রতিকূল স্থান হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কেননা পানির উষ্ণতার তারতম্যের জন্য সমুদ্রস্রোতেও ঘটছে বৈপরীত্য। এর উপর রয়েছে খাদ্যাভাব। সমুদ্রে পর্যাপ্ত খাদ্য না পেয়ে সামুদ্রিক প্রাণীরা তীরে উঠে পড়ছে। অর্থাৎ, মূলত খাদ্য ও বাসস্থানের জন্যই এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে বলে তার মত।অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রী ট্যানিয়া প্লিবারসেক এই ঘটনার জন্য খুবই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আল-জাজিরা, বিবিসি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *