ভাঁজ করা স্মার্টফোনের চমক

ভাঁজ করা (ফোল্ডেবল) স্মার্টফোন তৈরিতে মেতেছে স্মার্টফোন নির্মাতারা। চলতি বছরের শুরুতেই স্পেনের বার্সেলোনায় বিশ্ব প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আয়োজন ওয়ার্ল্ড মোবাইল কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি) ভাঁজ করা স্মার্টফোন প্রদর্শন করে চমক দেখিয়েছিল স্যামসাং, শাওমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় এবার নিজেদের ভাঁজ করা স্মার্টফোন ধীরে ধীরে উন্মুক্ত করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

ভাঁজ করা স্মার্টফোনে সাধারণ স্মার্টফোনের তুলনায় বড় পর্দায় কাজ করার পাশাপাশি ভিডিও বা সিনেমা দেখা যায়। পর্দার বিভিন্ন অংশে একসঙ্গে একাধিক কাজ করার সুযোগ মেলায় এরই মধ্যে প্রযুক্তিপ্রেমীদের নজর কেড়েছে ভাঁজ করা স্মার্টফোন। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন, কীভাবে কাজ করে ভাঁজ করা স্মার্টফোন? বারবার ভাঁজ করলে পর্দা বা ডিসপ্লে নষ্ট হয় না কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ভাঁজ করা স্মার্টফোনের প্রযুক্তি ও নির্মাণকৌশল সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

 

যেভাবে কাজ করে
স্মার্টফোনে সাধারণত এলসিডি, এলইডি, অ্যামোলেড, আইপিএস প্রভৃতি প্রযুক্তির পর্দা ব্যবহার করা হয়। পর্দাগুলো অনমনীয় হওয়ায় চাইলেও ভাঁজ করা যায় না। অপর দিকে ভাঁজ করা স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয় বিশেষ প্রযুক্তির ওএলইডির (অর্গানিক লাইট এমিটিং ডায়োড) সমন্বয়ে তৈরি নমনীয় পর্দা। নমনীয় পর্দাগুলো চাইলেই ভাঁজ করা যায়। ফলে স্মার্টফোনও ভাঁজ হয় সহজে।

সাধারণত অর্গানিক পলিমার দিয়ে তৈরি করা হয় ওএলইডি পর্দা। নমনীয় এ পর্দার পুরুত্বও হয় বেশ কম। পুরুত্ব কম হলেও পর্দাটি স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত কাজ করে। এমনকি ছবি ও ভিডিও দেখানোর সময় ব্যাটারি খরচও কম করে। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে পর্দাটির সঙ্গে নমনীয় প্লাস্টিক যুক্ত করে স্মার্টফোন তৈরি করছেন নির্মাতারা।

ভাঁজ করা ওএলইডি ডিসপ্লেতে একটি স্তর থাকে, যা বোর্ড নামেও পরিচিত। এটি মূলত পর্দার প্রাথমিক স্তর, যা অন্য সব স্তরকে সমর্থন করে। নমনীয় পর্দার বোর্ডটি পলিমাইড বা প্লাস্টিকের পাতলা স্তর দিয়ে তৈরি হওয়ায় ইচ্ছেমতো ভাঁজ করা বা বাঁকানো যায়। শুধু তা–ই নয়, স্মার্টফোনের অর্ধেক অংশ পর্দা এবং বাকি অংশ কি–বোর্ড হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

দাম কম না বেশি
সাধারণ স্মার্টফোনের তুলনায় ভাঁজ করা স্মার্টফোনের দাম বেশি হয়ে থাকে। স্যামসাং শাওমি ছাড়াও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ভাঁজ করা স্মার্টফোন বাজারে পাওয়া যায়। সম্প্রতি স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড ৪ মডেলের ভাঁজ করা স্মার্টফোন উন্মুক্ত করেছে। স্মার্টফোনটির দাম ১ হাজার ৮০০ ডলার বা ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা (প্রায়)। অপর দিকে শাওমির তৈরি মিক্স ফোল্ড ২ নামের ভাঁজ করা স্মার্টফোনটি কিনতে গুনতে হবে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩৪০ ডলার বা ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা (প্রায়)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *