পেলের শেষকৃত্য শুরু, জনতার ঢল

মৃত্যু হয়ে গেছে আগেই। এবার শেষ বিদায়ের পালা। শেষবারের মতো ফুটবলের রাজা, কিংবদন্তি পেলের মৃতদেহ আনা হলো তার সারাজীবনের প্রিয় ক্লাব সান্তোসের ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সোমবার পেলের মরদেহ এনে রাখা হলো ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে।

মৃত্যুর চারদিন পরে পেলের শেষ কৃত্যের প্রক্রিয়া শুরু হল। আগের দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল সোমবার ভোরেই সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতাল থেকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে। সেখানেই তাকে ২৪ ঘণ্টা ধরে শেষ শ্রদ্ধা জানায় ভক্ত ও সমর্থকরা। আজ মঙ্গলবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

pele

গতকাল সোমবার সকাল থেকেই ভিলা বেলমিরোর আশেপাশে ভিড় করে সমর্থকরা। সবাই আগে গিয়ে পেলের মরদেহে শ্রদ্ধা জানাতে উৎসাহী। অনেক বড় ভিড়। এই ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে।

স্টেডিয়ামের মাঝে তৈরি অস্থায়ী মঞ্চে। তার কফিনের উপরের অংশ খুলে দেওয়া হয়। একটি সাদা চাদর জড়ানো রয়েছে পেলের শরীরের উপরের অংশ। তার কফিনের পাশে রাখা সাদা রংয়ের ফুলের তোড়া। পেলের কফিন বয়ে আনার সময় কাঁধে নেন তার ছেলে এডিনহো।

pele

পেলের কপালে হাত রেখে প্রার্থনা করে শ্রদ্ধা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন ছেলে এডিনহো। এরপর পেলের স্ত্রী মার্সিয়া আয়োকি একটি ক্রুশ পেলের দেহের উপরে রাখেন। পরে এডিনহোকে জড়িয়ে ধরেন। সোমবার সকাল ১০টা থেকে সাধারণ মানুষের জন্যে স্টেডিয়ামের গেট খুলে দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষের ভিড়ে হাজির ছিলেন ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি গিলমার মেন্দেস। তিনি বলেন, ‘খুবই দুঃখের মুহূর্ত।

তবে এবার বুঝতে পারছি আমাদের দেশের সেরা ফুটবলারের প্রতি মানুষের ভালবাসা কতটা। আমার দফতরে পেলের স্বাক্ষর করা জার্সি রয়েছে। গোলরক্ষক হিসেবে তার একটি ছবিতেও স্বাক্ষর রয়েছে। এ ছাড়া প্রচুর ডিভিডি, ছবি এবং আরও অনেক কিছু রয়েছে।’

pele

১২ বছরের ছেলে বার্নার্ডোকে নিয়ে রিও ডি জেনিরো থেকে ৩০০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সাও পাওলোয় এসেছিলেন কার্লোস মোতা। তিনি বলেন, ‘আমার ছোটবেলা জুড়ে পেলের প্রভাব অপরিসীম। তার বিশ্বকাপ জয় ভোলা যাবে না। উনি গোটা দেশের আদর্শ।’বার্নার্ডো বলছেন, ‘আমি কোনও দিন পেলেকে খেলতে দেখিনি; কিন্তু তার অনেক ভিডিও দেখেছি। উনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার।’

ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল সংস্থার সভাপতি আলেসান্দ্রো ডোমিঙ্গেজকে দেখা যায় শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তারাও।

pele

স্টেডিয়ামে তিনটি বিরাট পতাকা ছিল। তার একটিতে পেলের ছবি এবং ১০ নম্বর জার্সি আঁকা। অন্য একটিতে লেখা ছিল, ‘রাজা দীর্ঘজীবী হোন’। দুপুরের দিকে সাও পাওলোর বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে পেলের স্মরণে মিছিল করা হয়। সেই মিছিল যায় পেলের মায়ের বাড়ির পাশ দিয়ে। ছেলের মৃত্যুর খবর এখনও জানেন না শতায়ু মা সেলেস্তে আরান্তেস। সান্তোস স্টেডিয়ামে গিয়ে সেই মিছিল শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *