ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান

ম্যাচটা পেন্ডুলামের মত দুলছিল দুই দিকেই। এক সময় তো মনে হচ্ছিল ম্যাচটা পাকিস্তানের জন্য বের করা কঠিনই হয়ে যাবে। চ্যাম্পিয়ন হবে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু মিডল অর্ডারে হায়দার আলি ব্যাট করতে নেমেই সব হিসেব উল্টে দিলেন। মাত্র ১৫ বলে তার করা ৩১ রানই শেষ পর্যন্ত জয়ের পথ দেখিয়েছে পাকিস্তানকে এবং স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ‘বাংলা ওয়াশ’ ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তানই। ১৫তম ওভারেই মূলত ম্যাচের গতি পরিবর্তন করে দেন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার হায়দার আলি এবং মোহাম্মদ নওয়াজ। এই এক ওভার থেকেই ২৫ রান তোলেন তারা দু’জন। বোলার ছিলেন ইশ সোধি।

পরের ওভারে টিম সাউদির বলে মার্ক চাপম্যানের দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হন হায়দার। কিন্তু ১৫ বলে খেলা তার ইনিংসটিই সঞ্জিবনী শক্তি হিসেবে কাজ করেছে পাকিস্তান ইনিংসে। এরপর টিকনারের বলে আসিফ আলি আউট হয়ে যাওয়া মনে করা হচ্ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বুঝি আবার নিউজিল্যান্ডের হাতে চলে গেলো। কিন্তু মোহাম্মদ নওয়াজ আর ইফতিখার আহমেদ মিলে সে শঙ্কা উড়িয়ে দেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় কেবল ৪ রান। টিকনারের বল থেকে সে রান তুলতে কষ্ট হয়নি ইফতিখার আর নওয়াজের। ইফতিখারের বিশাল ছক্কা দিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।

ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের জন্য যে উইকেট তৈরি করা হলো, ম্যাচের শুরুতে মনে হচ্ছিল এখানে রান উঠবে। কিন্তু ম্যাচের আয়ু যত বাড়ছিল, তত উইকেট স্লো হয়ে ওঠে। রান করাটাও যেন খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিল পাকিস্তানি ব্যাটারদের জন্য। প্রথমে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ড যেখানে প্রথম ১০ ওভারে রান তুলেছিল ৮৩। উইকেট হারিয়েছিল ২টি। পাকিস্তানের ব্যাটাররা প্রথম ১০ ওভারে রান তুলতে সক্ষম হয় ৬৪টি।

যদিও উইকেট হারায় তারা একটি। শুধু তাই নয়, রানের গতি মন্থর করে দেয়ার পাশাপাশি দ্রুত দুটি উইকেটের পতনও ঘটায় নিউজিল্যান্ড। যার ফলে ১১-১২তম ওভারে মনে হচ্ছিল, ফাইনাল জয়টা পাকিস্তানের জন্য কঠিনই হবে। ১১তম ওভারের প্রথম বলেই শান মাসুদকে ফিরিয়ে দেন মিচেল ব্রেসওয়েল। পয়েন্টে খেলতে গিয়ে ফিন অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ২১ বলে ১৯ রান করে আউট হন তিনি।

এরপরই ইশ সোধির বলে ধরা পড়েন পাকিস্তানের আশার প্রদীপ হয়ে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান। ২৯ বলে ৩৪ রান করে সোধির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি। রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি। ৭৪ রানে মোহাম্মদ রিজওয়ান আউট হওয়ার পর ম্যাচটা কঠিনই হয়ে পড়েছিল বাবর আজমদের জন্য। কিন্তু হায়দার আলি আর আসিফ আলি মিলে কঠিন ম্যাচটাকেই সহজ করে দেন। ২৬ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা দু’জন। ১৫ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৩১ রান করে আউট হন হায়দার। মোহাম্মদ নওয়াজ ২২ বলে অপরাজিত থাকলেন ৩৮ রানে।

২টি বাউন্ডারি আর ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। শেষ মুহূর্তে ১৪ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ ইফতিখার। ১টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি। শেষ ৯.৩ ওভারে ১০৪ রান তোলে পাকিস্তান। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। ৩৮ বলে ৫৯ রান করেন কেন উইলিয়ামসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *