জিম্বাবুয়েকে জয়ের ১৫১ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ

হাতে উইকেট আছে, স্কোরবোর্ডেও রান খারাপ না। ভালোই ছিল। উইকেটে সেট হওয়া ব্যাটার আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং অভিজ্ঞ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। দু’জনই হার্ডহিটার। স্লগ ওভারে ভালো খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সুতরাং, শেষ ওভারে ভালো কিছু রান উঠবে, এটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু আফিফ-মোসাদ্দেকের মত ব্যাটার থাকার পরও শেষ ওভারে উঠলো কেবল ৭ রান। উল্টো তিনটি উইকেট হারাতে হলো বাংলাদেশকে। জিম্বাবুয়ের বোলার রিচার্ড এনগারাভা। প্রথম বলটাই দিলেন ওয়াইড। পরের বলে বাউন্ডারি হয়নি, তবে ৩ রান নিলেন আফিফ-মোসাদ্দেক।

পরের বলে তেড়ে-ফুঁড়ে মারার প্রস্তুতি নিয়ে মোসাদ্দেক খেললেন রক্ষণাত্মক শট। ব্যাটের কানায় লেগে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দিলেন চাতারার হাতে। উইকেটে আসলেন নুরুল হাসান সোহান। এসেই বোলার বল হাত থেকে ছাড়ার আগেই তিনি রিভার্স সুইপ খেলার জন্য ব্যাট পেতে দিয়ে রাখলেন। বোলার করলেন ফুলটস বল। উল্টো নিজের হেলমেই বল দিয়ে আঘাত করলেন তিনি। তবুও ১ রান করলেন। পরের বলে আফিফ হোসেন খেললেন। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে গেলেন নুরুল হাসান সোহান। পরের বলে ইয়াসির আলী রাব্বি তেড়ে-ফুঁড়ে মেরেও ১ রানের বেশি নিতে পারলেন না রাব্বি। শেষ বলে আউট হয়ে গেলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। এনবারাভার স্লোয়ার বুঝতেই পারেননি আফিফ। এলবিডব্লিউ হয়ে যান।

শান্তর ব্যাটে যেভাবে রান উঠেছিল, তাতে শেষ দুই-তিন ওভারে রান সেভাবে উঠলো না। বিশেষ করে শেষ ওভারে যারপরনাই হতাশ করেছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। যেভাবে ১৬০ প্লাস রান হওয়ার কথা, সেখানে স্কোর থেমে গেলো ১৫০ রানে। উল্টো শেষ ওভারে তিনটি উইকেট হারালো বাংলাদেশ। সেমির আশা টিকিয়ে রাখতে হলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ জিততেই হবে বাংলাদেশকে। এই সমীকরণ সামনে নিয়ে ব্রিসবেনের দ্য গ্যাবায় টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। খেলা শুরু হতে না হতেই উইকেট হারালেন ওপেনার সৌম্য সরকার। সে সঙ্গে ওপেনিংয়ে বরাবরের মতই দৈন্যদশার প্রদর্শনী দেখালো টাইগাররা। মাত্র দুটি বল মোকাবেলা করলেন সৌম্য। দ্বিতীয় বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন রেগিস চাকাভার হাতে। এ সময় বাংলাদেশের রান ছিল ১০।

সৌম্য আউট হওয়ার পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু খুব বড় হলো না এই জুটিটা। ২২ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন তারা। ৬ষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে ফিরিয়ে আনা হয় মুজারাবানিকে। এসেই উইকেট তুলে নিলেন তিনি। ওভারের তৃতীয় বলে তেন্দাই চাতারার হাতে লিটন দাসকে ক্যাচ তুলে দিতে বাধ্য করেন মুজারাবানি। ১২ বলে ১৪ রান করেন লিটন। তিনটি ছিল বাউন্ডারির মার। লিটন দাস আউট হওয়ার পর সাকিব আল হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্ত- এই দুই বাঁ-হাতি মিলে বাংলাদেশকে বেশ ভালো অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৫০ প্লাস রানের জুটিও গড়ে ফেলেন তারা দু’জন।

কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। শন উইলিয়ামসের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন সাকিব আল হাসান। স্লোয়ার দিয়েছিলেন উইলিয়ামস। সাকিব চেয়েছিলেন স্লগসুইপ খেলতে। কিন্তু বল ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে উঠে যায় উপরে। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো ব্লেসিং মুজারাবানি শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলটিকে তালুবন্দী করলেন। ২০ বলে ২৩ রান করে বিদায় নিলেন সাকিব। বাউন্ডারি মারলেন কেবল ১টি। সাকিব আউট হওয়ার পরই নিজের ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ক্যারিয়ারের ১৬তম টি-টোয়েন্টিতে এসে ফিফটির দেখা পেলেন তিনি।

ফিফটি করার পরপরই দ্রুত গতিতে রান তোলার দিকে নজর দেন শান্ত। ১৬তম ওভারে ১৬ রান নেন তিনি। কিন্তু ১৭তম ওভারে সিকান্দার রাজার স্লোয়ার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। এক্সট্রা কভারে দাঁড়ানো ক্রেইগ আরভিন সেই ক্যাচটি তালুবন্দী করে নেন। আউট হওয়ার আগে ৫৫ বলে ৭১ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৭টি বাউন্ডারি এবং একটি ছক্কার মারে সাজানো ছিলো তার ইনিংস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *